
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সড়কে প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে অসহনীয় যানজট। প্রধান সড়কের কুতুপালং, মরাগাছতলা, বালুখালী, কোর্টবাজার ও উখিয়া সদরের বিভিন্ন অংশে যানজটে আটকে থাকছে হাজারো মানুষ। অনিয়ন্ত্রিত বাজার, রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচল ও তল্লাশিচৌকির কারণে এ ভোগান্তির মুখে পড়ছে সাধারণ যাত্রী ও কর্মজীবীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুতুপালং এলাকায় প্রধান সড়কের দুপাশে গড়ে উঠেছে অগোছালো বাজার। এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ট্র্যাফিক পুলিশের উপস্থিতি না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
থাইংখালী এলাকার কলেজছাত্র আব্দুল আলম বলেন, ‘আড়াই ঘণ্টা আগে পরীক্ষা দিতে বের হলেও কুতুপালং বাজার পার হতেই এক ঘণ্টা চলে যায়। দেরি হলে পরীক্ষার মানসিক চাপ আরও বেড়ে যায়।’
এছাড়া, রোহিঙ্গাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে মরাগাছতলা, বালুখালী ও উখিয়ার কাস্টমস এলাকায় প্রতিদিনই বসছে তল্লাশিচৌকি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাম্পের কাঁটাতার ভেঙে বা ফাঁক গলে অনেক রোহিঙ্গা বাইরে বের হন। তাঁদের শনাক্ত করে ফেরত পাঠাতে হয়। ফলে সড়কে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকে যানবাহন।
কক্সবাজার থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে প্রতিদিন কর্মস্থলে যান এনজিওকর্মী রোকেয়া জাহান। তিনি বলেন, ‘ভোরে বের হয়েও যানজটের কারণে সময়মতো পৌঁছাতে পারি না। আবার বিকেলেও একই ভোগান্তি। এতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়, জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।’
ট্র্যাফিক পুলিশের অভাবও দায়ী করছেন স্থানীয়রা। কোর্টবাজার ট্র্যাফিক পুলিশের পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, ‘জনবল সংকট রয়েছে। এই মুহূর্তে কেবল কোর্টবাজার স্টেশন এলাকায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে।’
রোহিঙ্গা শিবির এলাকার নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পুলিশ সুপার রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘কাঁটাতার সংস্কার আমাদের দায়িত্ব নয়। তবে আমরা তল্লাশিচৌকিতে নজরদারি বাড়িয়েছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই যানজট যেন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে। কোনো সমাধান চোখে পড়ছে না।’
বাজার এলাকায় অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে কুতুপালং বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জানে আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘যানজট নিরসনে স্থানীয় পুলিশ ও ট্র্যাফিক বিভাগকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
পাঠকের মতামত